উল্লেখ্য সভায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে প্রদেয় একগুচ্ছ নির্দেশনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল:
১. আসন্ন ইদ যাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা। প্রত্যেক লঞ্চের নির্ধারিত স্থানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার রেট চার্ট প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২. ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ী ব্যক্তিদের শুধু জরিমানাই করা হবে না অধিকন্তু ঐ লঞ্চের রুট পারমিটও বাতিল করা হবে। কোনো অবস্থাতেই ফিটনেসবিহীন কোনো জলযান নৌপথে চলাচল করতে পারবে না।
৩. কোনো লঞ্চ বা ফেরী সিরিয়াল ব্রেক করে চলতে পারবে না। নৌপরিবহন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
৪. সদরঘাট বা অন্যান্য ইজারাযুক্ত লেবার হ্যান্ডেলিং ঘাট/পয়েন্টে লেবার/কুলি/পোর্টার দ্বারা যাত্রীদেরকে কোনোরূপ হয়রানি করতে পারবে না। কোনো অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবে না। প্রত্যেক অনুমোদিত পোর্টার/কুলিকে স্ব স্ব ইজারাদারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং নেইম প্লেট প্রদর্শিত থাকতে হবে। বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সংস্থাকে এ বিষয়ে তদারকি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসময় উপদেষ্টা মহোদয় যে সকল জলযানের ফিটনেস নেই তাদেরকে অবিলম্বে ফিটনেস সনদ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
৫. নৌযাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে রাতে চলাচলকারী লঞ্চে আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা মহোদয় বলেন, রাতে চলাচলকারী দূরপাল্লাগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৪জন করে আনসার সদস্য নিয়োগের জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে কোনো দুর্ঘটনা সংগঠিত হলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবেন। আনসার সদস্যদেরকেও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
৬. লঞ্চে বা ফেরীঘাটে কর্মরত স্টাফদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং আইডি কার্ড থাকতে হবে।
৭. নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, বরিশালের মেঘনা নদীসহ সকল অপরাধপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে।
৮. রাতের বেলায় স্পীড বোট ও বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। আর ইদের আগে ৫দিন ও পরে ৫দিন দিনের বেলায়ও বন্ধ থাকবে বাল্কহেড। নৌপুলিশ ও কোষ্ট গার্ডের পাশাপাশি নৌবাহিনীও নৌপথের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্ব পালন করবেন।
৯. ১৫ রমজান হতে ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্মুক্ত রাখতে হবে মর্মে উল্লেখ করে নৌ উপদেষ্টা মহোদয় বলেন, কোনো ভাবেই রাস্তার উপরে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনী বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবেন। প্রয়োজনে রেকার দিয়ে অভিযুক্ত বাসগুলোকে সড়িয়ে দিতে হবে।
এছাড়া ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে উপদেষ্টা মহোদয় সদরঘাটসহ বিভিন্ন নৌরুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা মহোদয়, পরিচালক (নৌনিট্রা) জনাব সাইফুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার প্রধানগণ, জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, লঞ্চ মালিক, যাত্রী পরিবহন সংস্থা, শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।